ইতিমধ্যে জেলায় তিনশ নারীকে এ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে এবং এর সুফল পেতেও শুরু করেছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন এবং ডিমলা উপজেলার ডিমলা সদর ও বালাপাড়া ইউনিয়নের চারটি সমিতির মাধ্যমে সুবিধাভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের ‘চওড়া বড়গাছা নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতি’ ও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে ‘লক্ষ্মীচাপ নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতি’ এবং ডিমলা সদর ‘ডিমলা নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতির’ মাধ্যমে তিনশ জনকে নির্বাচিত করে ১ লাখ ২০ হাজর করে টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। যা দিয়ে উন্নত জাতের গাভী কিনেছেন সুবিধাভোগী নারীরা।
ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ‘দোয়েল নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতির’ সদস্য জয়নব আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা কৃষি কাজ করে সংসার চালান। বাবা-মা, দুই ভাই, দুই বোন মিলে আমরা ছয়জন। অনেক কষ্ট করে বাবাকে সংসার চালাতে হয়। আগের একটি গাভী ছিল। নতুন করে এই সমিতিতে অর্ন্তভুক্ত হয়ে ১ লাখ ২০ টাকা পেয়েছি। তা দিয়ে আরও একটি গাভী কিনে লালন-পালন শুরু করেছি। এজন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছি।’
আরেক সুবিধাভোগী নারী ডিমলা সদর উপজেলার বাবুরহাট এলাকার নাজমা বেগম বলেন, ‘স্বামী বেলাল হোসেন চায়ের দোকান করে পাঁচজনের সংসার চালান। সাত মাস আগে ঋণের এক লাখ টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি। গাভী থেকে এখন প্রতিদিন ২২ কেজি দুধ পাচ্ছি। বাড়িতে কিছু খাওয়ার জন্য রেখে সবটুকু বিক্রি করে দেই। প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে প্রায় নয়শ টাকা পাচ্ছি। সমবায় বিভাগের এই উদ্যোগ আমার বিশেষ কাজে এসেছে।’
জানা গেছে, শতকে ২ টাকা সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে ২ বছরের মধ্যে সুবিধাভোগীদেরকে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প এলাকা এবং সুবিধাভোগীদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন সমবায় অধিদপ্তর রংপুরের যুগ্ম নিবন্ধক ও পরামর্শক।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, ঋণের টাকা দিয়ে গাভী কেনার এক বছর পর থেকে দৈনিক ২০০ টাকা কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হবে সুবিধাভোগীদেরকে। চারটি সমিতির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩০০ জনকে এই ঋণ দিতে পেরেছি। পর্যায়ক্রমে আরও ১০০ জনকে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত নারীরা সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে নিজেদেরকে কর্মমুখী ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
উল্লেখ্য, ‘উন্নত জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প’এর আওতায় দেশের ২৫টি জেলার ৫০টি উপজেলায় এই প্রকল্প পরীক্ষামূলক আকারে শুরু করেছে সমবায় অধিদপ্তর। সফল হলে প্রকল্প এলাকা আরও বৃদ্ধি পাবে।